বাসায় অক্সিজেন নেওয়ার ক্ষেত্রে যা জানা উচিত – Dr Bidduth Barua

বাসায় অক্সিজেন নেওয়ার ক্ষেত্রে যা জানা উচিত

করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির সাথে অক্সিজেনের প্রয়োজনীয়তাও বাড়ছে এবং ঘরে ঘরে অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুদ করার মানসিকতা তৈরি হয়েছে। প্রথমে আমাদের জানা উচিত করোনা আক্রান্তদের এক্সট্রা অক্সিজেনের দরকার রয়েছে কি না ?

আমাদের সকলের বাসায় প্রায় মেডিকেল ডিভাইস অক্সিমিটার রয়েছে। অক্সিমিটারের মাধ্যমে অক্সিজেন স্যাচুরেশন- এর মাত্রা জানতে পারি।

গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের স্যাচুরেশনের মাত্রা ৯২-৯৪ শতাংশ তাদের অক্সিজেন নেওয়ার প্রয়োজন নেই। অক্সিজেন নিলেও তেমন কোনো উপকারে আসবে না। কিন্তু তাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণের মধ্যে রাখতে হবে। যদি স্থিতিশীল থাকে , তাহলে অক্সিজেনের প্রয়োজন নেই। কেবল মাত্র রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ৯০ শতাংশের নিচে নেমে গেলেই কৃত্রিম অক্সিজেনের প্রয়োজন রয়েছে।

কিন্তু রক্তে অক্সিজেনের আদর্শ মাত্রা হওয়া উচিত ৯৪- ৯৯ শতাংশ। যদিও কৃত্রিম অক্সিজেন থেরাপি তাৎক্ষণিকভাবে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়াতে বা স্বাভাবিক করতে পারে না। তবে কোভিড রোগীদের ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশের উপরে অক্সিজেনের পরিমাণ পাওয়া হবে অত্যন্ত উপকারী। সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রেও ১০০ শতাংশ অক্সিজেনের পরিমাণ কেবল অক্সিজেনের অপচয়। একদিকে অক্সিজেন মজুদ করে অক্সিজেনের অপচয় অন্যদিকে অক্সিজেনের দুষ্প্রাপ্যতা এই মুহূর্তে বাঞ্ছনীয় নয়।

কেবল অক্সিজেন দেওয়া মানেই রোগী ঝুঁকিমুক্ত নয়। তাই রোগীর শরীরের অক্সিজেনের মাত্রা ও নাড়ির স্পন্দনের দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখতে হবে। কেননা বুঝতে হবে কৃত্রিম অক্সিজেন সাপোর্ট কতোটুকু রোগীর কাজে আসছে এবং দুইঘন্টা পরপর মেপে যদি মনে হয় অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না তাহলে দ্রুত হাসপাতালে রোগীকে নিতে হবে।

অক্সিজেন সরবরাহ করার পাশাপাশি অক্সিজেন মাস্ক ব্যবহারে যথেষ্ট যত্নশীল হতে হবে। অক্সিজেন মাস্ক ও টিউব হতে হবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন।

ভাইরাস থেকে বাঁচতে ও অক্সিজেন যাতে লিক না হয় সেজন্য বায়ুরোধক ভাবেই বসাতে হবে। তাই সঠিক মাস্ক ও সঠিক ব্যবহার পদ্ধতি নিশ্চিত করতে হবে। অনেকে নেঙরা অক্সিজেন সিলিন্ডার বা টিউব থেকে রোগীর শরীরে ফাঙ্গাস ইনফেকশন হয়ে যেতে পারে। যা কিনা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ভারত জুড়ে বিস্তার করছিলো।

অনেক সময় শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়াতে কিছু পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে শরীরে অক্সিজেনে মাত্রা ৫-১০% বেড়ে যেতে পারে। রোগীদের বুকের ভরে শোয়া , গলার বা ঘাড়ের নিচ থেকে বুক পর্যন্ত ও হাঁটুর নিচ থেকে দুই পায়ের ফাঁকে বালিশ দেওয়া সহ দৈনিক ৩০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করলে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়তে পারে।

সর্বক্ষেত্রে নিজের উপর দায়িত্ব না নিয়ে একজন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয় উচিত রোগীর অক্সিজেন সরবরাহের পরিমাণ নির্ধারণ করতে। স্বাস্থ্য বিধি মেনে পরিবারসহ অন্যান্যদের সচেতন করে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে হবে।

Written by

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *