“মেয়র পদক ২০২২” এ শ্রেষ্ঠ যুব আদর্শ ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া – Dr Bidduth Barua

“মেয়র পদক ২০২২” এ শ্রেষ্ঠ যুব আদর্শ ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া

যুব আইকন ক্যাটাগরিতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন প্রবর্তিত ‘মেয়র পদক ২০২২ যুব আদর্শ সম্মাননা’ পেলেন চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া। 

১৩ মার্চ চট্টগ্রামের রেডিসন ব্লুতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন চট্টগ্রাম শহরের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ও মানবিক কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এমন গুণীজনদের ৫ ক্যাটাগরিতে সন্মাননা সূচক “মেয়র পদক ২০২২“ প্রদান করেছেন। সেখানে যুব আইকন ক্যাটাগরিতে বিদ্যুতকে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ রেজাউল করিম চৌধুরী। 

এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি  হিসেবে ছিলেন ইপসা পরিচালক নাসিম বানু, সেভ ডি চিলড্রেন-এর হিউম্যানিটারিয়ান মোস্তাক হোসেন, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মো. ফখরুজ্জামান, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. আমিনুর রহমান, চট্টগ্রাম পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়। 

অনুষ্ঠানে ৫ টি ক্যাটাগরিতে ইয়ুথ আইকন— ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া, নগর নেতৃত্ব— কাউন্সিলর মো. মোবারক আলী, নগর স্বেচ্ছাসেবক— মুহাম্মদ আবু বক্কর ছিদ্দিক হারুন, নারী নেতৃত্ব— ডা. বাসনা রানী মুহুরীকে এবং বিশেষ ক্যাটাগরি— গাউসিয়া কমিটি, বাংলাদেশকে মেয়র পদক প্রদান করা হয়। 

এই মেয়র পদক ২০২২ যুব আদর্শ সম্মাননা-অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতায় ছিলেন, ইপসা ও সেভ দি চিলড্রেন।

উল্লেখ, ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া তরুণ ও যুবকদের আইকন হিসেবেই পরিচিত। প্রতিনিয়ত তিনি তার কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে যুবকদের অনুপ্রাণিত করে যাচ্ছেন। ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া ২০২০ সালের মার্চ-এপ্রিল মাসে করোনা সংক্রমণের শুরুতে মাত্র ১৫ দিনে বেসরকারি উদ্যোগে প্রথম করোনা বিশেষায়িত হাসপাতাল চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে বাংলাদেশে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেন।

তিনি একজন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, দেশের শীর্ষস্থানীয় বিদ্যাপীঠ ঢাকা মেডিকেল কলেজে থেকে এমবিবিএস উত্তীর্ণ হয়ে চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত হন। পরবর্তীতে তিনি সুইডেনের বিশ্ববিখ্যাত ক্যারোলেস্কা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জনস্বাস্থ্য বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন এবং ডেনমার্কের আরহার্স বিশ্ববিদ্যালয়ে রিসার্চ এসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করেন। ২০১৯ সালে দেশে ফিরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা পেশায় যুক্ত হন। ২০২০ সালে করোনা মহামারিতে দেশের সর্বপ্রথম বেসরকারি উদ্যোগে দেশের প্রথম ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি করার মাধ্যমে তিনি যুবকদের দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে সংকট সময়ে মানুষের পাশে থাকার যে বার্তা দিয়েছেন, তা নিঃসন্দেহে যুব সমাজকে মহতী কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ করেছে। ফলশ্রুতিতে যুব সমাজ ব্যাপকভাবে অক্সিজেন ব্যাংক, আইসোলেশন সেন্টার, টিকা দানে উৎসাহিত করণ সহ নানামুখী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছে।

কোভিড-১৯ মহামারীর ভয়াবহ পরিস্থিতিতে তিনি নিজে রোগীদের প্রত্যক্ষ সেবা দেওয়ার পাশাপাশি যুব সমাজকে সাথে নিয়ে তৈরি করেছিলেন তার ফিল্ড হাসপাতাল টিম। যারা তার সাথে করোনা যোদ্ধা হিসেবে টানা ১৪০দিন করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিয়েছেন। ২০২১ সাল থেকেই তিনি নিয়মিতভাবে তরুণ-যুবাদের নিয়ে বিভিন্ন ক্যারিয়ার কর্মশালা, সামাজিক ও মানবিক কাজ করে যাচ্ছেন। চট্টগ্রাম শহরের সকল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও স্বেচ্ছাসেবীদের একই প্ল্যাটফরমে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি ও উজ্জীবিত করতে ২০২১ সালে স্বেচ্ছাসেবী মিলনমেলা ও ২০২২ সালে ভলান্টিয়ার ফেস্টিভ্যাল ও ভলান্টিয়ার এ্যাওয়ার্ড চালু করেছেন। যা যুব সমাজকে মানবিক ও সামাজিক কাজে আরো বেশি সম্পৃক্ত করে তুলছে। 

এছাড়াও ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সমাজসেবায় আরো বেশি সম্পৃক্ত করতে প্রতিষ্ঠা করেন রোটারেক্ট ক্লাব অব মেডিকেল কমিউনিটি যেখানে প্রায় ৬০জন মেডিকেল শিক্ষার্থী সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তাঁর এই মহতী কার্যক্রমের জন্য ২০২০ সালে তিনি শেখ হাসিনা ইয়ুথ ভলান্টিয়ার এওয়ার্ড লাভ করেন। 

ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া যুব সমাজ উদ্বুদ্ধ করতে ইতোমধ্যে বেশকিছু কর্ম পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো;  বেকার যুবকদের আত্মকর্মসংস্থান করতে প্রশিক্ষণ প্রদান, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবকরা যাতে যথাযথ ভাবে মূল্যায়িত হয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে পরামর্শ ও সম্পৃক্ত করণ, তরুণ-যুবকদের সামাজিক ও মানবিক কাজে অংশগ্রহণ নিশ্চিতে মোটিভেশনাল কর্মশালা, ক্যারিয়ার কর্মশালা, বুষ্টআপ ক্যাম্প, জব ফেয়ার আয়োজন ইত্যাদি। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ – পরিচালক পদে কর্মরত আছেন।

Written by

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *